কোটা আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা প্রাণঘাতি নাশকতায় নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আর এই নাশকতা মোকাবিলায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে প্রতি ওয়ার্ডেই প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় কোটা আন্দোলনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত লাশের রাজনীতি করতে চায় বলে মন্তব্য করে তিনি। বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের নেতৃত্ব অশুভ শক্তির কাছে চলে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রতিহত করতে হবে। আপোষ না করে মাঠে থেকে লড়াইয়ে নির্দেশনাও দেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমরা কোন সংঘাত চাই না। তরুণ প্রজন্ম সংঘাতে লিপ্ত হবে এটা কাম্য নয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য নিয়ে কাদের বলেন, কোটার দাবিতে বিএনপি নেই, তারা নির্বাচিত সরকারকে হটাতে চায়। বর্তমান আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার চেষ্টা করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি করে বিএনপি জামায়াত আবারো হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে, গুপ্ত হত্যা শুরু করেছে, উস্কানি দিচ্ছে। বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে বোমা, ককটেলসহ নানা দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শিক্ষার্থীদের পিতামাতাদের আহ্বান আপনাদের সন্তানদের আত্মবিধ্বংসী পথ থেকে সরিয়ে আনুন। কারণ, আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে নিয়েছে বিএনপি -জামাতের ক্যাডাররা।

‘এমন অবস্থায় আমরা বসে থাকতে পারি না। অস্তিত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় নেই। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান,’ দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকেও তাদের বড় নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে। যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে। সারাদেশে সতর্ক হয়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে অশুভ অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে। অপশক্তির সঙ্গে কোনো আপোশ হবে না। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো ছাড় নেই।

দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হামলা এসেছে, হুমকি এসেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের করতেই হবে। কাজেই আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান।

আগেই বলেছিলাম, এই আন্দোলনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত লাশের রাজনীতি করতে চায়। গতকাল সারাদেশে সহিংসতা  করে। ঢাকায় পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলে। যার কারণে কয়েকটি তাজা প্রাণ ঝড়ে গেলো। ঢাকায় ছাত্রলীগ নেতা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।

শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা চট্টগ্রামে মধ্যযুগীয় কায়দায় ভবন থেকে থেকে ফেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, আন্দোলন আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নেই। ছাত্রদল-শিবির মিলে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনকে সরকার উৎখাতের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে।

তবে সরকার কোনো সংঘাত চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা চাই না। তরুণ প্রজন্ম সংঘাত সংঘর্ষে লিপ্ত হবে সেটা কাম্য নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করলে, রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে সরকারকে কঠোর হতেই হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আঘাত করা হয়েছে, উপাচার্যকে হেনস্তা করা হয়েছে।

কিন্তু গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম দেখে ছাত্রলীগকে আক্রমণকারী মনে হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, অথচ সবচেয়ে আক্রমণের শিকার ছাত্রলীগের কর্মীরা।

তিনি বলেন, হল থেকে মেয়েদের বের করে দেয়া হয়েছে। পোশাক পরিচ্ছদ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বর্বরভাবে প্রক্টরকে পেটানো হয়েছে। কিন্তু সেগুলো গণমাধ্যমে আসেনি। বেশিরভাগ হামলাই ছাত্রলীগের ওপর।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামাত যদি মনে করে আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে। তবে তা ভুল হবে। আওয়ামী লীগ কোনো ছাড় দেবে না। সর্বশক্তি দিয়ে বিএনপি-জামাতের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে আহ্বান জানাই।

কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি দাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাথায় আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ধৈর্য ধরুন। কোনো ফাঁদে পা দেবেন না।